Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

কৃষি তথ্য সার্ভিস
 
কৃষি কথা (জিজ্ঞাসা ও প্রশ্নোত্তর)
 
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মারুফ
 
 


প্রশ্ন : আমি সূর্যমুখীর বীজ কীভাবে পেতে পারি এবং কীভাবে চাষ করব?
উত্তর : বিএডিসির বীজ ডিলার/বীজ ডিলার/ বারি হতে মৌসুম শুরুর আগেই যোগাযোগ করতে হবে।
রবি মৌসুমে অগ্রহায়ণ, খারিফ মৌসুমে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে ৫০ সে. মি. x ২৫ সে. মি. দূরত্বে হেক্টরে ৮/১০ কেজি রোপণ করতে হবে। হোমাই/ভিটাভেক্স দ্বারা বীজ শোধন করা হলে ভালো হয়। জমি ৪/৫টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে ঝুরঝরে করে নিয়ে ইউরিয়া ১৮০ কেজি, টিএসপি ১৫০ কেজি, এসওপি ১২০ কেজি, জিপসাম ১২০ কেজি, দস্তা ৪-৫ কেজি এবং বোরাক্স প্রায় ১০ কেজি প্রতি হেক্টরে দিতে হবে। চারায় ছত্রাকের আক্রমণ হলে রোভরাল এবং কাটুই পোকা দমনে কার্বোফুরান ব্যবহার করতে হবে।
 
 
প্রশ্ন : লিচু বাগান তৈরির উপায় কী? লিচু বাগানের পরিচর্যা কীভাবে করব?

উত্তর : উঁচু, মাঝারি উঁচু জমিতে এক বছর বয়সী সুস্থ ও সবল গুটি কলমের চারা রোপণের জন্য বাছাই করতে হবে। রোপণ দূরত্ব হবে ৮-১০ মিটার, গর্ত হবে ১´১১ মিটার। রোপণের সময় - জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় অথবা ভাদ্র-আশ্বিন। প্রতি গর্তে - গোবর/জৈব সার ২০-২৫ কেজি, টিএসপি ৬০০-৭০০ গ্রাম, এমওপি ৩৫০-৪৫০ গ্রাম, জিপসাম ২০০-৩০০ গ্রাম, দস্তা ৪০-৬০ গ্রাম। জাত- বোম্বে, চায়না, মোজাফ্ফরপুরী, মাদ্রাজী (কম ধরে)।
 
কলমের গাছ হলে ৪ বছর বয়স পর্যন্ত ফুল ভেঙে দিতে হবে। চারা গাছে ঘন ঘন সেচ দিতে হবে, ফলন্ত গাছে ফুল হওয়ার সময় হতে ফুল ফোটা পর্যন্ত সময়ে ০১ বার এবং ফল মটর দানার মতো হলে আরেক বার সেচ দিতে হয়। লিচুর গাছ ঝোপাল হয় তাই ফল পাড়ার সময় গাছের ভেতরেও পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশের জন্য ডালপালা ভেঙে দিতে হয়। বিশেষত মঞ্জুরি/ফলের গোছার গোড়া থেকে ভাঙতে হয়।
 
প্রশ্ন : ফল গাছে ফুল আসার সময়, ফল ধরার পরে এবং ফল সংগ্রহ করার পরবর্তী ব্যবস্থাপনা কীভাবে করবে?
 
উত্তর : মাটিতে রসের অভাব থাকলে ফুল আসার সময় হতে সম্পূর্ণ ফুল ফোটার সময় পর্যন্ত সেচ দিতে হবে। ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। তবে বালইনাশক ব্যবহার না করাই ভালো। কেননা তাতে মৌমাছি মারা যেতে পারে।
 
ফল ধরার পরও ছত্রাকনাশক এবং প্রয়োজনে বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে। হরমোন দেয়া যেতে পারে। গাছের গোড়ায় রসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোনো ডাল নুয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে খুঁটি দিতে হবে।
 
ফল সংগ্রহোত্তর ঝোপানো, মরা, ভাঙা, রোগা ডাল কেটে ছত্রাকনাশক বা পোকায় আক্রমণ থাকলে বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে। তবে গাছের গোড়া কুপিয়ে সার ও সেচ অবশ্যই দিতে হবে।
 
প্রশ্ন : ফল ছিদ্রকারী পোকার লক্ষণ ও প্রতিকার কী?
 
উত্তর : স্ত্রী পোকা মার্চ-এপ্রিলে মার্বেলাকারের আমের গায়ে মুখের শুড়ের সাহায্যে চিরে/ছিদ্র করে ২-৭টি ডিম পাড়ে। আমের বৃদ্ধির কারণে ছিদ্রটি ভরাট হয়ে যায়। ভেতরে ৭ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে পালবিহীন কীড়া বের হয়ে আঁকাবাঁকা সুড়ঙ্গ করে শাঁস খেতে থাকে। ৪০-৫০ দিনের মধ্যে কীড়া পূর্ণবয়স্ক পোকায় পরিণত হয়ে খোসা ছিদ্র করে বের হয়ে যায়। এ পোকা বছরে একবারই বংশ বৃদ্ধি করে। আম গাছের গোড়ার চারদিকে ৪ মিটার ব্যাসার্ধের বৃত্তের মধ্যের সব আগাছা পরিষ্কার করে কুপিয়ে দিলে পোকা নষ্ট হয়। গাছে পরগাছা থাকলে তার মধ্যেও এ পোকা লুকিয়ে থাকে। সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করা যায়।
 
 
প্রশ্ন : হাঁসের প্লেগ হলে করণীয় কী? (লক্ষণ : ক্ষুধামন্দা, দুর্বলতা, ঝিমানো)
উত্তর : সুস্থ হাঁসগুলোকে আলাদা করে ফেলতে হবে। অসুস্থগুলোকে মাটিতে পুঁতে ধ্বংস করতে হবে। ডাক প্লেগ, টিকা ১০০ মিলিলিটার পানির সঙ্গে ১ মিলিলিটার মিশিয়ে বুকের মাংসে দিতে হবে। ৬ মাস পর পর ৩ সপ্তাহ বা তদূর্ধ্ব বয়সের হাঁসকে দিতে হবে।
 
Sulphonamide পাউডার ২ লিটারে ১ গ্রাম পরিমাণ ৫ দিন ধরে দিতে হবে। Ciprofloxacin 1gm/ltr Antibiotic injection/tablet renamycin 1 cc ওজন অনুযায়ী table দেয়া হয়। আক্রান্তগুলোকে আলাদা করে সুস্থদের ভ্যাক্সিনেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। সুস্থ অবস্থায় টিকা দিতে হবে। ১০টি হাঁসের জন্য ১টি রেনামাইসিন ট্যাবলেট দিতে হবে। Renamycin-100 0.5 cc/Indigenous Duck DPV  টিকা ১০০ সিসি পানিতে গুলিয়ে ১ সিসি পরিমাণ বুকের মাংসে দিতে হবে। ২৮ দিন বয়সের হাঁসের ক্ষেত্রে এই টিকা দিতে হবে। ভ্যাকসিন দিতে হবে। লক্ষণ দেখা দিলে আক্রান্তদের আলাদা করে ফেলতে হবে। মারা গেলে মাটির ২/৩ ফুট নিচে গভীরে পুঁতে ফেলতে হবে।
 
প্রশ্ন : ঘের এর প্রস্তুত প্রণালি কী হবে?  
   
উত্তর : ঘের শুকিয়ে তলদেশের পচা কাদা অপসারণ এবং তলদেশ সমান করতে হবে। পাড় উঁচু করে বাঁধতে হবে। ঘেরের পাড়সহ তলায় চুন ভালোভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে প্রতি শতকে ১ কেজি হারে। ঘেরের তলদেশ চাষ দিয়ে আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে। ছোট মেসসাইজের নাইলন জাল দিয়ে ঘেরের চারপাশে বেড়া (৩ ফুট উঁচু) দিতে হবে। পানি প্রবেশ পথ ও জরুরি পানি নির্গমন পথ করতে হবে এবং তাতে স্ক্রিন বা বানা (বাঁশের পাটা ও নাইলনের জাল দিয়ে তৈরি) দিতে হবে। চুন প্রয়োগের ৫-৭ দিন পরে প্রয়োজনমতো পানি প্রবেশ করিয়ে সার প্রয়োগ করতে হবে ইউরিয়া ১৫০-২০০ গ্রাম/শতক, টিএসপি ৭৫-১০০ গ্রাম/শতক হারে। এরপর ব্লিচিং পাউডার সব ঘেরে ছিটিয়ে দিয়ে পানি জীবাণুমুক্ত করতে হবে। অনেক সময় ঘেরের এককোণায় বাঁশের ফ্রেমের সঙ্গে একটি নার্সারি তৈরি করতে বলা হয়। হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা বা গোবর ব্যবহার করা যাবে না।
 
প্রশ্ন : মাছের গায়ে উকুন রোগ হলে কী করব?
উত্তর : সুমিথিয়ন বা মেলাথিয়ন প্রতি শতাংশে প্রতি ফুট পানির গভীরতার জন্য ২ মিলি. প্রথম সপ্তাহে দিতে হবে এবং এভাবে ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। ডিপটারেক্স প্রতি শতাংশে ৫/৮ গ্রাম প্রতি ফুট পানির গভীরতার জন্য ৭ দিন অন্তর ৩ বার দিতে হবে। উকুনের ডিম পাড়ার স্থান (বাঁশ, চাটাই, কঞ্চি, তক্তা) তুলে ফেলতে হবে। রোগ প্রতিরোধের জন্য বায়ো কেয়ার ৮০-১২০ মিলি. প্রতি শতকে ৭ দিন পর পর দিতে হবে তবে রোগ নিরাময়ের জন্য পর পর ২ দিন ১২০-১৬০ মিলি. প্রতি শতক হারে দিতে হবে। লক্ষণ : ফুলকার পাশে পোকা থাকে এবং রক্ত চুষে খায়। চুলকানির কারণে মাছ লাফায়। গোবর/হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা বেশি দিলে এই রোগ হয়।
 
প্রশ্ন : মাছের পেট ফোলা রোগ হয় এবং মারা যায় এর প্রতিকার কী?
 

উত্তর : সিরিঞ্জ দিয়ে পেট থেকে পানি বের করে দিতে হবে। আক্রান্ত মাছ আলাদা করতে হবে। মাছের খাবারের সঙ্গে টেরামাইসিন ক্যাপসুলের গুঁড়া (১ গ্রাম/১ কেজি) মিশাতে হবে। অক্সিজেনের অভাবে এই রোগ হয়। ঘনত্ব কমিয়ে, চুন প্রয়োগ ও জাল টেনে বা হররা টেনে অক্সিজেন তৈরি করে প্রতিরোধ করা যায়। লক্ষণ : পাঙ্গাশের পেটে গ্যাস জমে যায়, পানির পিএইচ বেড়ে গেলে মাছ খেতে পারে না। রোগাক্রান্ত পুকুরে প্রতি শতাংশে ১০০ গ্রাম করে টিএসপি ২ বার ৭ দিন অন্তর অন্তর দিতে হবে।

 

* কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫। ই-মেইল : masum.maroof@gmail.com

 

আরো বিস্তারিত দেখুন কৃষি তথ্য সার্ভিস  ওয়েব সাইটে